অনুচ্চারিত উচ্চারণ - এ আপনাকে স্বাগত।
বাঙালিকে আজ এই ধরণের শিরোনামের সামনাসামনি হতে হচ্ছে কেন? তাহলে কি বাঙালি তার নিজস্ব সত্ত্বাকে হারিয়ে ফেলছে। যদি তাই হয়, তবে তা সংকটের পূর্বাভাষ। এই সংকট থেকে বেরোতে হবে? আমি বলব, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু কাজটা খানিকটা হলেও কঠিন। কারণ, বাঙালি তার নিজস্ব লোক উৎসবগুলি বহু বছর ধরে একটু একটু করে ভুলতে শুরু করেছে, যা এখন আরও ব্যাপকতা লাভ করছে।
বাঙালি মূলত দুইভাগে ভাগ হয়ে গেছে ধর্মীয় সংস্কৃতির মোড়কে। একদিকে দুর্গোৎসব এবং অন্যদিকে ঈদ যার কোনাটাই বাঙালির নিজস্ব নয়।
সমস্যা হচ্ছে আমরা যারা বাঙালি, তার একটা অংশ দুর্গোৎসবকে নিজের ভাবতে পারছিনা, অন্য অংশ ঈদকে নয়। এখানকার বাঙালীর বড় অংশ দুর্গোৎসবকে বাঙালির উৎসব বলে দাবী করে, আর ওপারের বড় অংশ ঈদকে। তাহলে প্রশ্ন ওঠে বাঙালি জাতিসত্তা কী বিলুপ্তির পথে?
আমার পর্যবেক্ষণ খানিকটা তা-ই। আমরা সবাই নিজেকে বাঙালি বলে দাবি করি, অথচ ঈদ ও দুর্গোৎসবকে একসঙ্গে নিজের বলে ভাবতে পারিনা। উগ্র ধর্মীয় ভাবাবেগ আমাদেরকে সদা বিচ্ছিন্ন করতে ব্যস্ত। আর আমরা অন্ধের মত তাকে অনুসরণ করছি।
অন্যদিকে আমরা ধর্মীয় বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে নিজেদের জন্য একটি সর্বজনগ্রাহ্য উৎসব তৈরি করতেও পারছিনা। ওপার বাংলায় ১লা বৈশাখকে সামনে রেখে সেটা করার একটা ধারা লক্ষ্য করা গেলেও এখানে তেমন কোন উদ্যোগ তেমন সক্রিয় আজও হয়ে উঠেনি। যদিও আমরা কিছু মানুষ এই লক্ষ্যে পথ হাটতে শুরু করেছি।
যদি আমরা এই পথহাটাকে সচল রাখতে পারি, তবে তা আশার আলো বলাই যায়। কিন্তু তাকে এগিয়ে নেওয়ার মানুষ কী সত্যিই বাড়ছে?
সঠিক তথ্য দেওয়া মুশকিল। কিন্তু ধারাটা যে বেঁচে আছে তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। আমাদের দায়িত্ব তাকে আরও এগিয়ে নিতে সক্রিয় হওয়া। আর তাহলেই এই আবেদন সার্থক হয়ে উঠবে। আমাদের উৎসব আমাদের মতই থাকবে।
This comment has been removed by a blog administrator.
ReplyDelete